Ticker

6/recent/ticker-posts

ধূমকেতু


 #ধূমকেতু

 #Comet

#জ্যোতির্বিজ্ঞান 

ধূমকেতু হচ্ছে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকা এক ধরণের লেজ বিশিষ্ট বস্তু যা শূন্য থেকে হঠাৎ উদয় হয়ে আবার রহস্যজনকভাবে শূন্যেই মিলিয়ে যায়। সৌরজগতের অন্যান্য বস্তুর মত এরা পাথর দিয়ে তৈরি নয়, বরং এরা মহাকাশে মজুত ধুলিকণা, গ্যাস ও বরফ দিয়ে তৈরি। তবে বরফের সাথে কিছু পরিমাণে মিথেন, অ্যামোনিয়া, ও কার্বন ডাইঅক্সাইডও মিশ্রিত থাকে। সচরাচর এরা কয়েক কিলোমিটারের চেয়ে বেশি বড় হয় না। ধূমকেতুকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।


১। স্বল্পকালীন ধূমকেতু (Short period Comet): সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে যে ধূমকেতুগুলোর ২০০ বছরের কম সময় লাগে তাদেরকে বলা হয় স্বল্পকালীন ধূমকেতু। এদের উৎপত্তি হয় মূলত নেপচুন গ্রহের কক্ষ পথের বাইরের একটা এলাকা থেকে যাকে বলা হয় কুইপার বেল্ট (Kuiper belt).


 ২। দীর্ঘকালীন ধূমকেতু (Long period Comet): সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে এদের হাজার থেকে কোটি বছর পর্যন্ত লাগতে পারে। বেশির ভাগ দীর্ঘকালীন ধূমকেতুর উৎপত্তি হয়ে থাকে সৌরজগতের একদম শেষ প্রান্তের অন্য একটা এলাকা থেকে যাকে বলা হয় ওর্ট ক্লাউড (Oort Cloud). মাঝে মাঝে দীর্ঘকালীন ধূমকেতুগুলো সূর্যের কাছাকাছি এসে গ্রহগুলোর টানে কক্ষপথ বেঁকে গিয়ে স্বল্পকালীন ধূমকেতুতে পরিণত হতে পারে।


ধূমকেতুর কক্ষপথ এত বড় হয় যে পৃথিবী থেকে খালি চোখে সহজে এদেরকে দেখা যায় না তবে এরা যখন সূর্যের কাছাকাছি চলে আসে তখন এদের বাইরের স্তরের বরফ গলতে শুরু করে এবং এর চারপাশে একটা ধূমায়িত আবহ তৈরি করে যেখানে ধুলিকণা ও গ্যাস থাকে। একে বলা হয় Coma. সূর্যের শক্তিশালী বিকিরণের প্রভাবে এই ধুলিকণাগুলো সম্প্রসারিত হয়ে একটা লেজের আকৃতি ধারণ করে যার দৈর্ঘ্য ১ কোটি কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। ধূমকেতুর সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে তার লেজ। সূর্যের বেশি কাছে চলে আসলে এদের লেজের ধুলিকণা ও গ্যাসের মধ্যে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয় আর দেখে মনে হয় লেজটা জ্বলছে। এমন অবস্থায় এদেরকে খালি চোখেও দেখা যায়। তবে ধূমকেতুর লেজ যে সাধারণ সব লেজের মত পেছন দিকেই থাকবে তেমন কিন্তু নয়। ধূমকেতু যেদিকেই যাক না কেন এর লেজটা কিন্তু সব সময় সূর্যের উল্টো দিকেই থাকে যার কারণে অনেক সময় দেখা যায় যে ধূমকেতু যেদিকে যাচ্ছে, লেজটা তার পেছনে না থেকে বরং তার সামনে সামনে চলছে।

Post a Comment

0 Comments